::: www.sensongs.com ::: ® Ri - Mar Jaava - Fashion ::: www.se .mp3
Found at bee mp3 search engine

শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০১১

হুমায়নিকা by প্রসূন বীপ্র (part-1)

 আকাশটা অস্বাভাবিক একটা রুপ ধারন করেছে। স্বাভাবিক ভাবে আকাশ থাকে নীল আর সাদার সংমিশ্রনে । কিন্তু আজ, এখন তার রঙ গাড় ছাই রঙের, প্রায় কালোর কাছাকাছি ।

কালো শুনলেই অনেকটা বিরক্তি লাগে অনেকের । যেমন কোন সুন্দরি বিয়ের পাত্রি কে যদি বলা হয় আপনার যার সাথে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে তার গায়ের রঙ কালো। আপনার কি মনে হচ্ছে জানি না, তবে আমার মনে হয় সে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠবে। তেলে বেগুনে ঠিক কিভাবে জ্বলে ? ব্যাপারটা ঠিক আমার মাথায় ঢোকে না । হওয়া উচিত ছিল তেলে বেগুনে পুড়ে ওঠা । আর না হলে তেলে বেগুনে পুরবে বলে আগুনের মত জ্বলে উঠল। সে যাই হোক, অনেক মেয়ে কাল রঙ কে পছন্দ করে। আমার এক সুন্দরী বান্ধবী মেয়ে-ছেলের সাদা-কালো প্রসঙ্গে আমাকে একদিন বলেছিল, "  দেখ, আমি অনেক সুন্দরি; আমার গায়ের রঙ-ও ফর্সা। এখন আমার জামাই যদি কালো হয় , সে সবসময় আমার মন যুগিয়ে চলতে চাইবে; কারন উলটা  পালটা কিছু করলে পাছে আমাকে হারাবার ভয়। "
মেয়েরা সবসময় চায় তার ছেলেবন্ধুটি তেমন আচরন করুক, যেমনটা প্রভুভক্ত কুকুর তার মুনিবের সাথে করে । কিন্ত তারা এটা যানে না ছেলেরা কুকুর-ই । যতক্ষন ভালবাসা পায় ততক্ষন প্রভুভক্ত কুকুর আর যখন ভালবাসা হারায় তখন পাগলা কুকুর । ছেলেদের কুকুরের সাথে তুলনা করলাম বলে কেউ আবার রাগ করবেন না, সে ব্যাপারে আগে-ভাগেই ক্ষমা চেয়ে রাখছি। যদিও আমি নিযেও ছেলে।
কুকুর তার প্রভুকে ভক্তি করতে থাকুক কিংবা পাগলা হয়ে কামড়াতে থাকুক , আমারা আবার আকাশের দিকে ফিরে তাকাই।
হ্যা আকাশের রঙ আজ কালো, পুরো আকাশ টা যত দূর পর্যন্ত দৃষ্টি যায় , মেঘে ঢাকা। কেমন যেন একটা গুমটো পরিবেশ সৃষ্টি করেছে । আমার মন টাও আজ খুব ... খারাপ নাকি ভালো তা বলতে পারব না। তবে এতটুকু বুঝতেপারছি যে, অনেকটা এখনকার আকাশের মত। তবে আকাশ এখন যা করবে , মন সেটা করবে না। আকাশ মাঝে মাঝে প্রচন্ড শব্দ করবে আর অঝরে বৃষ্টি ঝরাবে । কিন্তু মন সেটা করবে না। সুধু বৃষ্টি ঝরাবে, নিঃশব্দে।
মাঝে মাঝে যখন বিদ্যুৎ চমকাবে , তখন মন ছিনেমায় ফ্ল্যাশব্যাক দেখার মত পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করবে। হঠাত করে যদি বৃষ্টির একটা ঝাপ্টা মুখে এসে লাগে , ফ্ল্যাশব্যাক (স্মৃতি রোমন্থন) শেষ হয়ে যাবে এবং বাস্তবে ফিরে আসবে। আবার বিদ্যুৎ চমকাবে, মন আমার ফ্ল্যাশব্যাক দেখার মত পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করবে । ফ্ল্যাশব্যাক শেষ হবে। এভাবে কয়েকবার ঘটতে থাকবে আকাশ, মেঘ ও বৃষ্টির সম্মিলিত ইচ্ছা অনু্যায়ি । তারপর যখন বৃষ্টি শেষ হবে, তখন পর্দা নেমে যাবে, অর্থাৎ ছিনেমা  শেষ। যাই হোক  ছিনেমা যখন শেষ হয়েই গেল চলুন একসাথে চা-সিগারেট পান করে আসি, যাদের অভ্যেস আছে আর কি। যাদের নেই তারা একটু ব্যাতিক্রমধর্মী ভাব দেখাবার জন্য ছিনেমা শেষে পপকর্ন খেতে পারেন ।
 তবে যাই বলেন, চা আর সিগারেট একসাথে পান করার মজাই আলাদা । চা-সিগারেট খাওয়ার সময় ব্যাতিক্রমধর্মী আড্ডা দেয়ার একটা টপিক খুঁজতে থাকুন, হতে পারে সেটা আজ যে ছিনেমা দেখলাম তার নায়ক । আপনারা খুঁজতে থাকুন, আমি একটু ওয়াশ-রুম থেকে আসছি।
ওয়াশ রুম সম্পর্কে একটা কথা বলি । আমারা বাঙ্গালীরা ওসম্ভব রকম অনুকরনপ্রীয় । অসম্বভব অনুকরন প্রীয় বলাটা ঠিক হল না। বরং বলা উচিত সম্ভব অনুকরনপ্রীয় । কারন ব্যাপারটা সম্ভব বলেই বাস্তবে সেটা ঘটছে । এই যে দেখুন আমরা প্রায়ই বলি ছেলেটা বা মেয়েটা অসম্বভব সুন্দর । কিন্তু এটা ঠিক না । কারন ব্যাপারটা সম্ভব বলেই আমরা সেটা অনুভব করতে পারি ।
সে যাই হোক, প্রথমে আমরা বলতাম পায়খানা, তারপর ইংরেজদের অনুকরনে বলা শুরু করলাম টয়লেট, আর এখন যেটা বলি সেটা আর নাই বললাম ।

উফ এই যে কথা বলতে বলতে প্রেশারটা রিলিজ হয়ে গেছে । মানুষের মল-মুত্র তন্ত্রের (পরিপাক তন্ত্রের নাম জানি, কিন্তু এটাকে ঠিক কি বলে মনে পরছে না) ব্যাপারটাও কেমন যেন অদ্ভুত! হঠাত হঠাত প্রেশার দেয়, আবার একটু চেপে রাখতে পারলে প্রেশারটা রিলিজ হয়ে যায় । একটা ঘটনা মনে পরে গেল ।
আমি তখন অনেক ছোট, বয়ষ ৫ কি ৬ ঠিক মনে নেই। যে বয়ষে ছেলে মেয়েদের নাক দিয়ে শ্রাবনের অঝড় ধারার মত সিকনি ঝড়ে । তাই বলে ভাব্বেন না আমার নাকেও সিকনি ছিল। এ ব্যাপারে আমার মা অনেক সচেতন ছিলেন। যাচ্ছিলাম মায়ের সাথে মামা বাড়িতে। মা বাবার সাথে ঝগড়া করে আমাকে নিয়ে চলেছেন মামার বাড়ি কুমিল্লায়। বাস তার সতন্ত্র গতিতে থেমে থেমে চলছে। কখনো নিওমের বাইরে যোরে চালিয়ে সামনের গাড়িকে ওভারটেক করছে। গাড়ীর ভেতরে বিভিন্ন কিছিমের মানুষ।
পাশের সারির ছিটে বসেছে এক চাচা , যে কিনা তার পাশে বসা অল্প বয়ষী তরুনির দিকে বার বার আড় চোখে তাকাচ্ছে । অল্প বয়ষি তরুনিদের দিকে আড় তাকানোটা আসলে কি? আমি তখন সেটা বুঝতাম না। আপনারা অনেকেই হয়তো ধরে নিয়েছিলেন যে আমি ওই বয়ষেই খুব ট্যাটনা টাইপের ছিলাম। ড্রাইভার সাহেবকে একটা গান ছারতে বললেন একজন যাত্রী। ড্রাইভার সাহেব গানছারলেন "তুমি কি সেই আগের মতই আছো?" কিছুক্ষন গান চলার পরে দেখি মায়ের চ্চোখে জল, প্রথমে বুঝতে পারিনি কেন? পরে অবশ্য জানতে পেরেছি বাবা প্রায়ই মাকে গানটি গেয়ে শোনাতেন। এর মধ্যে হঠাত আমার খুব জোরেসোরে ২ নাম্বারের চাপ আসলো। আনি মাকে তা জানালাম। মা বললেন আর একটু অপেক্ষা কর, আমরা প্রায় পউছে গেছি। আমি
কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম। আবার মাকে বললাম । মা আবার আমাকে অপেক্ষা করতে বললেন। কিন্তু আমাদের প্রায় পউছোন টা আর পুরপুরিতে রুপ নেই না। এরি মধ্যে আমার মায়ের কাছে পিড়াপিড়ি করাটা চাচার নজর কেড়েছে, তিনি মায়ের কাছে সব শুনে আমাকে বললেন বাবারে পৃথীবি তে সবকিছু আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ি হয় না। আবার এমন অনেক কিছু আছে যা আমাদের মত সাধারন মানুষের ইচ্ছায় হয় না। যেমন এই বাসে ড্রাইভার সাহেব হলেন বিশেষ ব্যাক্তি, কারন উনি একাই ড্রাইভার আর আমরা সবাই প্যাসেঞ্জার। উনি তো একা কারর জন্য বাস থামাবেন না। ধইরয ধরো। পায়খানা পাইলে চাপ দিয়া রাখ, দেখবা একটু পরে আর বেগ দেবে না। চাচা এই কথা বলতে বলতে হঠাত গাড়ির চাক্কা পাংচার হয়ে গেল। যাত্রিরা সবাই চিৎকার চেচামেচি শুরু করল। কিন্তু পরে যখন বুঝতে পারল চেচামেচি করে লাভ নেই সবাই একে একে বাস থেকে নেমে দাড়াল। লাভের লাভ হল আমার, আমি একটু সুযোগ হল ২ নাম্বার করার। মা বললেন এখানে করতে পারবি? আমার একটু লজ্জা লজ্জা লাগছিল। আমি মাকে বললাম আমি পারব না এখানে। আমি চাচার থিউরী অনুসরন করার চেষ্টা করলাম। মা আমাকে কয়েকবার জোর করলেন। কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। এর মধ্যে বাসের চাক্কা লাগানো হয়ে গেল। আমাদের বাস হাটি হাটি পা পা বাদ দিয়ে খুব জোরে ইংরেজি হর্সের মত চলা সুরু করল। অনেকটা প্লেনের পাছায় আগুন লেগে রকেটের মত ছুটলো। এরপর আমরা অল্প সময়েই কুমিল্লা পউছে গেলাম। সেই ২ নাম্বার সারলাম গিয়ে নানার বাড়িতে। খানিক চিন্তা করুন সেই কতক্ষন ধরে চেপে রেখেছিলাম। বোধ করি ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন। সেই থেকেই আমি এই গুন্টা অর্জন করেছি, অনেক্ষন চেপে রাখতেপারি। আবার অনেক সময় করছি করছি ভেবে প্রেশার রিলিজ হয়ে যায়।

আসুন আমরা এবার মূল প্রসংগে ফিরে যাই । কথা হচ্ছিল আজকের ছিনেমার নায়ককে নিয়ে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন