::: www.sensongs.com ::: ® Ri - Mar Jaava - Fashion ::: www.se .mp3
Found at bee mp3 search engine

বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১১

শিরোনামহীন

পত্রিকার, ধনু  ঃ

ব্যবসায়ে লাভ জনক মুনাফা অর্জন করবেন, শিক্ষা সংস্কৃতি ও শিল্প কলায় আবেদনের জন্য সম্মাননা পাবার সম্ভবনা আছে। বেকারদের কেউ কেউ আকস্মিক বিদেশ যাত্রার সুযোগ পেতে পরেন। আর্থিক লেনদেন শুভ। প্রেমের ক্ষেত্রে ইতিবাচক সাড়া পাবেন। দুরের যাত্রায় সতর্ক থাকুন।
    দৈনিক প্রথম আলোর রাশিফল হতে চোখ তুলে নিল প্রত্যয় । সে এখন অসহ্য এক জ্বালাতনে রয়েছে। তার সামনের সিটে মধ্য বয়স্ক এক মহিলা মাথায় কদুরতেল জাতীয় কিছু একটা ব্যবহার করেছেন। যার গন্ধ ভূরভূর করে বাসের মধ্যে ছাড়াচ্ছে এবং প্রত্যয়ের  নাকে এক বিরক্তির উদ্রেক করছে। পাশের সিটে চাচার টাইপের লোক বসা আছেন। জোব্বা আর টুপি পড়া, মুখ ভর্তি পাকা সাদা সাদা দাঁড়ি। তিনি পান টিবুচ্ছে। পানের রসটা তার ঠোঁটের ডান পাশ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে (কিনচিৎ)। তার চোখে সুরমা মাখানো। সুরমা নাকি চোখের জন্য উপাদেও খাদ্য। সুরমা চোখে নিলে নাকি চোখের জ্যোতি বাড়ে। তার চাহুনী দেখে মনে হচ্ছে বাসের তামাম পরিবেশের উপর তার বিরাট আপত্তি। হঠাৎ করে প্রত্যয়ের মোবাইল বেজে উঠলো। কথা শেষ। লাইনটা কেটে দিল। ঐ চাচা বলল, "বুজলা বাবা এই মোবাইলটাই দেশটারে খাইলো"। কিছুক্ষন পড়ে,..... "ডুব যা মেরে পেয়ার মে........ মুভ ইয়োর বাডি বেবী"। দেখা গেল গানের আওয়াজটা ঐ চাচার যুব্বার পকেট থেকে আসছে। বিরক্তি কর এক হাসি হেসে চাচা তার এন-৭২ মোবাইল সেটটি পকেট থেকে বেড় করলেন। কথা শেষ করে প্রত্যয়কে বললেন, আমার ছেলে বিদেশে থাকে বাবা। সেই পাঠিয়েছে, তোমার চাচী ছাড়া এই ফোন দিয়া আমি অন্য কারও সাথে কথা বলিনা। লোকটার (চাচা) উপর প্রত্যয়ের বিরক্তি এসে গেল। এবার প্রত্যয় সামনের দিকে তাকালো, সামনের গ্লাসে লেখা "লাই-ইলাহা-ইল্লাহ্‌ আনতা ছুবহানাকা ইন্নি কুমতুম মিনাজ জোয়ালিমীন।  ভাবনার বিষয় হচ্ছে এটা গাড়ী চালানোর সময় অথবা আগে কজন ড্রাইভার এটা মনে মনে আওরান। প্রত্যয় এখন ঢাকা হতে চট্টগ্রামের পথে। সে ঝঃধৎ ষরহব  পরিবহনের  আই-১ সিটে বসে আছে। গাড়ীর গতি সীমা মাত্রার চেয়ে বেশী হওয়ায় সে লাফিয়ে উঠছে মাঝে মাঝে। পিছনের সিট হওয়ায় এক সমস্যা। প্রত্যয় ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্র। বাড়ী পাহাড় তলী চট্টগ্রাম। মামার বাসায় ভুতের গলিতে থাকে।
    প্রত্যয়ের একটা ব্যাপার ভাবতে ভাল লাগছে যে, সে আজ মামুনের সাথে দেখা করবে। প্রায় এক বছর পরে। সে এখন অনেক বড় হয়ে গেছে। মা তাকে দেখে কি বলবে? আর সেই পাশের বাড়ীর ঐ মেয়েটা যে কিনা তাকে দেখে মুচকি হাঁসি দিত। তাঁর মনে কি আছে এটা প্রত্যয়ের আজও অজানা। কিছুটা চিনি-ত সে এ ব্যাপারে। হাঠাৎ সুপার ভাইজার বলল টিকিটটা চষবধংব .  প্রত্যয় টিকিটটা এগিয়ে দিল। সামনে আর পিছনে গাড়ির সারি। কে কাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে। এই নিয়ে চলছে মাতা মাতি। এই খেলাটার নাম ওভারটেকিং ..........নের ঝিম ঝিম আসছে।
আকস্মাৎ ধুম !
কি ব্যাপার চোখে কিছুটা অন্ধকার, কাঁধে প্রচন- ব্যাথা। মাথায়ও ঝাকি খেয়েছে মনে হয়। তাঁর পর কি যেন............! হঠাৎ সব মনে পড়ে গেল কোথায় যেন কি হয়েছে। গাড়িটা শূণ্যে উড়ে পানিতে পড়েছে। ঝুপ পড়লো পানিতে, কাঁচে হাত পা কাটা, বলিত মানুষ সামনে থেকে, চিৎকার চেচা-মেচি, নরক, ........... মনে হলো দম আকটে যাচ্ছে। ঈশ্বরকে ডাকছে প্রত্যয়, মায়ের কথা মনে পড়ছে, মায়ের চেহারাটাও। কি করবে....? জানালা ভেঙ্গে বের হয়ে পড়লো প্রত্যয়। সাতরাচ্ছে। আশ্চর্য  উপরে উঠছে না কেন? পা জড়িয়ে গেছে কাপড়ে, তার, দড়ি কিসে যেন।তার পর চোখের মাঝে অগনিত লাল নীল আলো। দম ছিড়ে যাচ্ছে। মা বলে ডাকতে ইচ্ছে করছে। তারপর অনেরক কষ্ট অবশেষে শত চেষ্টার পরেও অন্ধকার! ।
প্রত্যয় স্থির আর ভাসমান। এমন প্রত্যয় আর বাস ড্রাইভার, সড়ক পথের দূর্ঘটনা বছরে কয়েক হাজার (বাংলাদেশের)।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন